ঢাকার ধামরাই উপজেলার বড়নালাই গ্রামের তরুণ রহমত উল্লাহকে র্যাব পরিচয়ে তুলে নেওয়ার প্রায় ১৬ মাস পর তিনি পরিবারের কাছে ফিরে এসেছেন। গত রোববার দুপুরে বাড়ি ফেরেন রহমত, তবে এখনও স্বাভাবিক হতে পারেননি। চুপচাপ বসে থাকা রহমতের মানসিক অবস্থা নিয়ে পরিবার উদ্বিগ্ন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রহমত কারও সঙ্গে তেমন কথা বলছেন না। তাঁর বড় ভাই মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, রহমত দিনভর ঘুমাচ্ছেন এবং মা তাঁর মানসিক অবস্থা নিয়ে খুব চিন্তিত। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন। ওবায়দুল্লাহ আরও জানান, ধামরাই থানার ওসি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন।
রহমত উল্লাহর ফিরে আসার ঘটনা
২০২২ সালের ২৯ আগস্ট রাতে র্যাব পরিচয়ে একটি দল রহমতকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। প্রায় ১৬ মাস পর, গত শনিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর থানার পুলিশ রহমতের সন্ধান দেয়। পরিবারের সদস্যরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ গিয়ে তাঁকে বাড়ি নিয়ে আসেন।
রহমতের ভাষ্যমতে
রহমত জানান, তাঁকে ৯ মাস ঢাকায় অজ্ঞাত স্থানে চোখ, হাত-পা বেঁধে আটকে রাখা হয়। পরে যশোর সীমান্তে নিয়ে গিয়ে ভারতের সীমানায় পুশ করা হয়। ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়। সর্বশেষ তাঁকে দমদম জেল থেকে সীমান্তে নিয়ে এসে বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করা হয়।
মানবাধিকার সংগঠনের মন্তব্য
রহমত উল্লাহর ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকার বলেছে, গুম হওয়া আরও অনেক বাংলাদেশি ভারতে বন্দী থাকতে পারেন। সংগঠনটি সরকারের প্রতি ভারতের কারাগারে বন্দী সব বাংলাদেশির তথ্য যাচাইয়ের আহ্বান জানিয়েছে।
২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭২১ জন গুমের শিকার হয়েছেন বলে অধিকার জানিয়েছে, যার মধ্যে ১৫৮ জনের এখনও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
রহমতের পরিবার এখন তাঁর মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
আরও পড়ুন:চাঁদপুরে চাঞ্চল্যকর সাত খুন: জাহাজ মালিক যা জানালেন