বাংলাদেশিদের জন্য রোমানিয়ার শ্রমবাজারে আবারও নতুন সুযোগের দ্বার খুলছে। প্রায় হাতছাড়া হয়ে যাওয়া এই বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে চলেছে। রোমানিয়ার কনস্যুলার মিশন, যারা তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে গত বছর ঢাকা ছেড়ে গিয়েছিল, এবার আবার ঢাকায় আসছে। আগামী জানুয়ারিতে তারা ঢাকায় বসে ভিসা ইস্যু শুরু করবে। রোমানিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিয়োগকর্তাদের চাহিদার ভিত্তিতে এই মিশন পাঠানো হচ্ছে। একইসঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ ওয়ার্ক পারমিটগুলো ১২৫ ইউরো ফি দিয়ে ১৫ জানুয়ারি থেকে নবায়নের সুযোগ দেওয়া হবে।

নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ

রোমানিয়া ইতোমধ্যে বিভিন্ন সেক্টরে ৩ লাখ কর্মী নিয়োগের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। নিয়োগকর্তাদের এবার শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভিসা ইস্যুর কাজটি এবার আইএলও-এর মধ্যস্থতায় বিশেষ ভিসা সেন্টারের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। পাশাপাশি যেসব বাংলাদেশি পূর্বে আবেদন করেও অপেক্ষায় ছিলেন, তাদের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুনর্বিবেচনা করা হবে।

পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা

রপ্তানিকারকরা মনে করছেন, বাংলাদেশিদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। কারণ, প্রায় ২০ হাজার প্রার্থী আগেও আবেদন করেছিলেন, কিন্তু অনেকে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও রোমানিয়া যেতে পারেননি। তবে এবার সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। গত বছর রোমানিয়ার কনস্যুলার মিশন ঢাকায় শুরু হলেও কিছু অনিয়ম, তদবির এবং ভিসা নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে। এতে মিশন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

সমস্যা ও সমাধানের আশা

২০২২ সালে রোমানিয়ার কনস্যুলার মিশন তিন মাস অবস্থান করে সাড়ে ৫ হাজার ভিসা ইস্যু করেছিল। কিন্তু গত বছর ভিসা ইস্যুর জন্য মিশন শুরু হলেও নানা সমস্যার কারণে ছয় মাসের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই তারা ঢাকা ত্যাগ করে। অভিযোগ রয়েছে, কিছু বাংলাদেশি রোমানিয়ায় গিয়ে অন্য দেশে পালিয়ে যান, যা রোমানিয়ার অসন্তুষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এছাড়া, মিশনের ওপর বিভিন্ন মহল থেকে তদবির ও চাপ তৈরি হয়। এমনকি ভিসাপ্রতি অর্থ আদায়ের অভিযোগও ওঠে। এসব কারণে বিদেশি প্রতিনিধিদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। বিষয়গুলো তদন্ত করা হলে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এইবারের উদ্যোগ সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হলে রোমানিয়ায় কর্মসংস্থান নিয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে পারে। বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য এটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।

আরও পড়ুন:ভারতের মিডিয়া কেন বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর প্রচার করছে?