২০০৯-২০২৩: ১৫ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার ও অর্থনীতির অবস্থা
আ.লীগ সরকারের শাসনামলে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা) পাচার হয়েছে। এ অর্থ গত পাঁচ বছরের জাতীয় বাজেটের চেয়ে বেশি। প্রতিবছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার বা ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে ৭৮টি পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে, যা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) রিপোর্টের তথ্যের সঙ্গে মিল রয়েছে।
অর্থ পাচারের চিত্র
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাচারের অর্থ দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের ৩.৪ শতাংশ। বিভিন্ন উপায়ে—বাণিজ্যভিত্তিক মানি লন্ডারিং, নগদ পাচার, হুন্ডি, ব্যাংক গ্যারান্টি অপব্যবহার এবং স্বর্ণ স্মাগলিং—এই অর্থ বিদেশে গেছে। ব্যাংক, শেয়ারবাজার, বিমা খাত এবং অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমকেও এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
দুর্নীতির খাত
প্রতিবেদনে ব্যাংকিং খাতকে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। খেলাপি ঋণ ৬ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে অন্তত ৩ বিলিয়ন ডলার অবৈধ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মেগা প্রকল্পে অনিয়ম
২৯টি মেগা প্রকল্পের মধ্যে ৭টি পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রতিটির ব্যয় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, যা ৮৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে প্রভাব
কর অব্যাহতির পরিমাণ দেশের জিডিপির ৬ শতাংশ। এটি অর্ধেকে নামিয়ে আনা গেলে শিক্ষা বাজেট দ্বিগুণ এবং স্বাস্থ্য বাজেট তিনগুণ করা যেত।
সুপারিশ
অর্থ পাচারে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার সুপারিশ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে আইপিপি প্রকল্প বন্ধ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল, যা ভবিষ্যতে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
আরও পড়ুন:১৫ আগস্ট ‘জাতীয় শোক দিবস’র ছুটি: হাইকোর্টের রায় স্থগিত।