1. tirtherkak24@gmail.com : tirtherkak :
সংখ্যালঘু ইস্যু মোকাবিলায় সরকারের দক্ষতা কতটা?
মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন

সংখ্যালঘু ইস্যু মোকাবিলায় সরকারের দক্ষতা কতটা?

  • প্রকাশিত: শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪
সংখ্যালঘু ইস্যু মোকাবিলায় সরকারের দক্ষতা কতটা?
সংখ্যালঘু ইস্যু মোকাবিলায় সরকারের দক্ষতা কতটা?

সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এবং সনাতন জাগরণের মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারকে ঘিরে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের বিষয়টি সামনে এসেছে।

এই ঘটনার পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি, সামাজিক মাধ্যমে পতাকা অবমাননার ছবি প্রচার, কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ, এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়ে হামলা ও হুমকির অভিযোগ নতুন মাত্রা পেয়েছে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা এবং বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিয়ে ঘটা এসব ঘটনা সরকার যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারছে কি না।

এ প্রসঙ্গে সরকারের করণীয়, ঘটনাগুলো কীভাবে আরও ভালোভাবে সামাল দেওয়া যেত এবং বর্তমান পরিস্থিতি অগ্রাহ্য করলে ভবিষ্যতে কী ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে—এসব বিষয়ে আলোচনা তীব্র হয়ে উঠেছে।

জাতিসংঘের সংখ্যালঘু বিষয়ক ফোরামে বাংলাদেশ জানিয়েছে যে, দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।

অন্যদিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেশটির পার্লামেন্টে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মন্দির ও ধর্মীয় স্থানে হামলার খবর পাওয়া গেছে এবং ভারত এসব ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পোস্টে ভারতের অবস্থানকে ‘দ্বিচারিত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং এর নিন্দা জানিয়েছেন।

পরিস্থিতি কেন এতদূর গড়ালো?

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর থেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিভিন্ন সময়ে হামলার শিকার হয়েছে, যা প্রতিটি সরকারের আমলেই কোনো না কোনোভাবে অব্যাহত থেকেছে।

তিনি বলেন, “জুলাইয়ের শুরু থেকেই দেশের নানা জায়গায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটছিল, যা এখনো চলছে। দুর্গাপূজার সময় বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হলেও সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়েছিল। চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার পরও অবনতি ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রে এমনটি হচ্ছে না।”

পাঁচই আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, আটই আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠন পর্যন্ত তিন দিন দেশে কোনো সরকার ছিল না। এই শূন্য সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের স্থাপনায় হামলার অভিযোগ উঠে।

সরকারপক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে ‘সংখ্যালঘু বলে কেউ আক্রমণের শিকার হননি’ বলে দাবি করা হয়েছিল। যদিও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অন্তত ২৯টি জেলায় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলার অভিযোগ তুলেছিল।

পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও মিছিল হয়।

১৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ইসকন, পূজা উদযাপন পরিষদ ও ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এরপর দুর্গাপূজার সময় কঠোর নিরাপত্তার পাশাপাশি মন্দিরে মাদ্রাসা ছাত্রদের পাহারার ব্যবস্থা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক তৈরি হয়।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর মতে, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় ত্বরিত ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণেই পরিস্থিতি এতটা জটিল হয়েছে। তিনি বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনেক শিক্ষককে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। সরকারের মধ্যে অস্থিরতা ও অনীহা রয়েছে, যা বড় ধরনের ব্যর্থতা।”

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় যখন সনাতনী জাগরণ মঞ্চ দেশজুড়ে সমাবেশ শুরু করে।

আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গাঁজার বড় চালানসহ দুইজন মাদক কারবারি আটক

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত || তীর্থের কাক
Theme Customized By Durjoy Bangla