রিয়াল মাদ্রিদ ১ (১)–(৫) ২ আর্সেনাল
স্পোর্টস রিপোর্ট: সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রূপকথা লেখা রিয়াল মাদ্রিদের পুরোনো অভ্যাস। ঘুরে দাঁড়ানোয় তারা অভ্যস্ত, বিশেষ করে যখন খেলা নিজেদের মাঠে। সমর্থকদের আশা ছিল, আবারও এমবাপ্পে–ভিনিসিয়ুসরা জাদু দেখাবেন, রচনা করবেন আরেকটি ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের গল্প।
কিন্তু সব গল্পের শেষটা একরকম হয় না। প্রতিবার ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয় না। এবার বাস্তবতার কঠিন দেয়ালে আটকে গেল কার্লো আনচেলত্তির দল।
প্রথম লেগে ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও অনেকে বিশ্বাস করেছিল রিয়ালের প্রত্যাবর্তনে। তবে মিকেল আরতেতার আর্সেনাল দ্বিতীয় লেগেও ছিল দুর্দান্ত। বার্নাব্যুর ভয়কে জয় করে ২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে দুই লেগে ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে জয়ে রিয়ালকে বিদায় করে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে লন্ডনের ক্লাবটি।
রেকর্ড ১৫ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া রিয়াল মাদ্রিদ ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলো। অন্যদিকে, আর্সেনাল ১৬ বছর পর ইউরোপের সেরা মঞ্চের সেমিফাইনালে উঠল। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ফরাসি চ্যাম্পিয়ন পিএসজি।
রিয়ালের জন্য ম্যাচটা ছিল ‘বাঁচা না বাঁচা’র লড়াই। তাই শুরু থেকেই গোলের খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন ভিনিসিয়ুস, বেলিংহামরা। কিন্তু আর্সেনালের জমাট রক্ষণ একের পর এক আক্রমণ রুখে দেয়। উল্টো পাল্টা আক্রমণে গানাররাও বারবার রিয়ালের রক্ষণভাগকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে।
প্রথমার্ধেই ঘটে নাটকীয়তা। ৬ মিনিটে এমবাপ্পের গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। এরপর ২৩ মিনিটে রিয়ালের পেনাল্টি আদায়ের সম্ভাবনা জাগে। এমবাপ্পের জার্সি টেনে ধরায় ডেকলান রাইসকে ফাউল ও হলুদ কার্ড দেন রেফারি ফ্রাঁসোয়া লেতেক্সিয়ের। তবে ভিএআরের সিদ্ধান্তে দেখা যায়, এমবাপ্পের আগে অফসাইডে ছিলেন রদ্রিগো। ফলে পেনাল্টি বাতিল হয়, এবং রাইসের কার্ডও তুলে নেওয়া হয়।
প্রথমার্ধে রিয়াল একটিও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের খোঁজে আনচেলত্তি একসঙ্গে তিন বদলি খেলোয়াড় নামান। কিন্তু লাভ হয়নি, বরং ৬৫ মিনিটে গোল হজম করে বসে তারা। বুকায়ো সাকা অসাধারণ দক্ষতায় বল জালে জড়ান কোর্তোয়ার বিপরীতে, আর্সেনালকে এনে দেন লিড।
দুই মিনিট পরই ভিনিসিয়ুস একটি গোল শোধ দেন। আর্সেনালের ডিফেন্ডার সালিবার ভুলের সুযোগ নিয়ে বল কাড়েন এবং গোল করে রিয়ালের ক্ষীণ আশাকে টিকিয়ে রাখেন।
তবে সেটা যথেষ্ট ছিল না। শেষ দিকে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ালেও গোল আসেনি রিয়ালের পক্ষ থেকে। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আর্সেনালের মার্তিনেল্লি নিশ্চিত করেন রিয়ালের বিদায়। কোর্তোয়ার সঙ্গে একান্তে সুযোগ পেয়ে বল জালে পাঠিয়ে দিলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। এই গোলই রিয়ালের চ্যাম্পিয়নস লিগ স্বপ্নে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়।
১৬ বছর পর সেমিতে উঠেই আর্সেনাল দেখাল, ইউরোপের মঞ্চে তারা ফিরে এসেছে নতুন উদ্যমে। এবার লক্ষ্য আরও বড়—ফাইনাল এবং শিরোপা।
আরও পড়ুন: ঘরের মাঠে হেরে শিরোপা লড়াই থেকে ছিটকে পড়ার পথে রিয়াল মাদ্রিদ