স্পোর্টস রিপোর্ট: কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে যুক্ত হলো আরেকটি গৌরবময় অধ্যায়। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ও নির্ধারণী ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নিল টাইগাররা।
এই জয়ের নায়ক দুই তরুণ—একজন স্পিনে আগুন ঝরানো মেহেদী হাসান, অন্যজন ব্যাট হাতে বিধ্বংসী তানজিদ হাসান। বোলিংয়ে মেহেদী এবং ব্যাটিংয়ে তানজিদের অনবদ্য পারফরম্যান্সেই সিরিজ ট্রফি উঠল বাংলাদেশের হাতে।
মেহেদীর ঘূর্ণি জাদুতে লঙ্কানদের বিপর্যয়
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। দলের স্কোরবোর্ডে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে, যার পেছনে মূল ভূমিকা রাখেন মেহেদী হাসান। মাত্র ৪ ওভারে ১১ রান খরচায় তিনি তুলে নেন ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট—নিশাঙ্কা, পেরেরা, চান্দিমাল এবং অধিনায়ক আসালাঙ্কা।
লঙ্কান ইনিংসে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা (৪৬ রান) এবং শেষদিকে ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন দাসুন শানাকা, যিনি ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। তার শেষদিকে ঝোড়ো ব্যাটিংয়েই ২০ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩২/৭।
তানজিদের তাণ্ডবে সহজ জয়
মাত্র ১৩৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন ইমন। কিন্তু এরপর ব্যাট হাতে মাঠে নামেন তানজিদ হাসান। অধিনায়ক লিটন দাসের সঙ্গে গড়ে তোলেন ৭৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। লিটন করেন ৩২ রান, কিন্তু আসল আলো ছড়িয়েছেন তানজিদ।
মাত্র ৪৭ বলে ৭৩ রানের চোখধাঁধানো এক ইনিংস খেলেন তিনি, যেখানে ছিল ১টি চার ও ৬টি বিশাল ছক্কা। শুরুর ধাক্কা সামলে তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই ম্যাচ চলে আসে একতরফা নিয়ন্ত্রণে।
শেষদিকে তাওহীদ হৃদয়ের (২৫ বলে ২৭\*) সঙ্গে ৫৯ রানের আরেকটি জুটি গড়ে ১৬.৩ ওভারেই জয় নিশ্চিত করেন টাইগাররা। হাতে ছিল ২১ বল ও ৮ উইকেট।
স্কোরকার্ড সংক্ষেপ:
শ্রীলঙ্কা: ১৩২/৭ (২০ ওভার)
নিশাঙ্কা ৪৬, শানাকা ৩৫* | মেহেদী ৪/১১
বাংলাদেশ: ১৩৩/২ (১৬.৩ ওভার)
তানজিদ ৭৩, লিটন ৩২ | হৃদয় ২৭*
ফল: বাংলাদেশ জয়ী ৮ উইকেটে (২১ বল হাতে)
সিরিজ: বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জয়ী
আজকের এই জয় শুধু একটি ম্যাচ জেতা নয়—এটি ভবিষ্যতের আত্মবিশ্বাস, তরুণদের দাপট, এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের এগিয়ে চলার পথের একটি উজ্জ্বল চিহ্ন।
আরও পড়ুন: চেলসির দুর্দান্ত চমক, পিএসজিকে উড়িয়ে দিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন