স্পোর্টস রিপোর্ট: লর্ডসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের প্রথম দিনটাই রূপ নিল বোলারদের উৎসবে। দিনভর ৭৮.৪ ওভার খেলা গড়াতে দেখা গেল ১৪টি উইকেটের পতন। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে করে মাত্র ২১২ রান, জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা দিন শেষ করল ৪৩/৪ স্কোরে। ফলে তারা এখনও পিছিয়ে ১৬৯ রানে।
মেঘলা আবহাওয়ার সুবিধা নিতে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। সেই সিদ্ধান্ত যথার্থ প্রমাণ করেন কাগিসো রাবাডা ও মার্কো জানসেনরা। ইংল্যান্ডের লাল ডিউক বল, তার উপর উপযুক্ত সুইং, দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা বল রাখলেন গুড ও ফুল লেংথে—ফলে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম ধাক্কাটা দেন রাবাডা। সপ্তম ওভারে উসমান খোয়াজাকে (০) ও ক্যামেরন গ্রিনকে (৪) ফিরিয়ে দেন তিনি। দুটি অসাধারণ ক্যাচ ধরেন বেডিংহ্যাম ও মার্করাম, বিশেষ করে দ্বিতীয়টি ছিল চোখধাঁধানো। এরপর লাবুশেন ও স্মিথ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু জানসেনের বাউন্সারে চোট পেয়ে লাবুশেন মনঃসংযোগ হারান, পরের বলেই কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে (১৭) ফিরতে হয় তাঁকে।
প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ট্রেভিস হেডকে দ্রুত ফেরানো। কিন্তু তিনি ১১ রান করেই জানসেনের লেগ সাইড বল খেলতে গিয়ে ভেরেইনির দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরলেন মধ্যাহ্নভোজের আগে শেষ ওভারে। এরপর কিছুটা লড়াই করেন স্টিভ স্মিথ (৬৬) ও বিউ ওয়েবস্টার (৭২)। স্মিথকে ফেরান মার্করাম, এবং ওয়েবস্টার আউট হন রাবাডার বলে। ওয়েবস্টার অবশ্য এক সময় ৮ রানে ছিলেন, তখন রিভিউ না নেওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। শেষ পর্যন্ত তিনিই দলের সর্বোচ্চ রান করেন।
অস্ট্রেলিয়া শেষ ৫ উইকেট হারায় মাত্র ২৩ রানে। পুরো ইনিংস গুটিয়ে যায় ২১২ রানে। রাবাডা ৫১ রান দিয়ে ৫টি উইকেট নেন, জানসেন ৩টি, মহারাজ ও মার্করাম ১টি করে উইকেট ভাগ করে নেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং শুরুটা আরও খারাপ। প্রথম ওভারেই স্টার্ক ফেরান মার্করামকে (০)। এরপর রিকেলটন করেন ১৬ রান, তাকেও ফেরান স্টার্ক। তিন নম্বরে বাভুমার বদলে নামেন মুল্ডার, কিন্তু তাঁর ওপর ভরসা রাখা ব্যর্থ হয়। কামিন্সের দুরন্ত ডেলিভারিতে ৬ রান করে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
অধিনায়ক বাভুমা খেলেন চরম রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে। প্রথম রান করতে খেলেন ৩১ বল। তাঁর এই মন্থর ব্যাটিং আরও চাপে ফেলে দেয় দলকে। দিনের একেবারে শেষে হেজলউড ফেরান ট্রিস্টান স্টাবসকে (২)। তবে শেষ ওভারে ডেভিড বেডিংহ্যাম দু’টি চার মেরে দলের রান কিছুটা এগিয়ে দেন।
প্রথম দিন শেষে বলতেই হয়—এই ম্যাচে ফল নির্ভর করবে কোন দলের বোলাররা কতটা ধারালো, তার উপর। পিচ এবং আবহাওয়া দুটোই বোলারদের পক্ষে। যে দল রান তুলতে পারবে না, তারা পিছিয়ে পড়বে দ্রুত। বর্ষা বা আবহাওয়ার বড় কোনো বাঁধা না থাকলে এই টেস্ট পঞ্চম দিনে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। প্রথম দিন শেষে কিছুটা এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া, এখন দেখার দ্বিতীয় দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন কিনা।
আরও পড়ুন: ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান, আইপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু