1. tirtherkak24@gmail.com : tirtherkak :
অবৈধ বালু উত্তোলন ও নদী ভাঙন: পরিবেশবিদদের উদ্বেগ
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ১১:৪২ অপরাহ্ন

অবৈধ বালু উত্তোলন ও নদী ভাঙন: পরিবেশবিদদের উদ্বেগ

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৫
অবৈধ বালু উত্তোলন ও নদী ভাঙন: পরিবেশবিদদের উদ্বেগ
অবৈধ বালু উত্তোলন ও নদী ভাঙন: পরিবেশবিদদের উদ্বেগ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর এলাকায় কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন এর ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকা হুমকির মুখে পড়েছে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে বসতভিটা হারানোর আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা ধরা’ সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ও পরিবেশবিদ শরীফ জামিলসহ অন্যান্য পরিবেশকর্মীরা।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর কেন্দ্রীয় সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্সের কার্যনির্বাহী সদস্য শরীফ জামিল, বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী (কিম), বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেলসহ একদল পরিবেশবিদ কুশিয়ারা নদীর অবৈধ বালু উত্তোলন ও ভাঙন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।

অবৈধ বালু উত্তোলন ও বাণিজ্যিক স্বার্থ

পরিদর্শনের সময় স্থানীয়রা জানান, ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে দিনরাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ‘ওয়াহিদ এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান অনুমোদন থাকার দাবি করলেও তাদের বালু উত্তোলনের পরিমাণ ও শর্ত সম্পর্কে এলাকাবাসীকে অবহিত করা হয়নি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয় লেনের প্রকল্পে ব্যবহারের কথা বলে উত্তোলিত বালু বিভিন্ন পক্ষের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া ‘মা এন্টারপ্রাইজ’, ‘রনি এন্টারপ্রাইজ’, ‘রাইসা এন্টারপ্রাইজ’, ‘আলী এন্টারপ্রাইজ’সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ৫-৬টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মদদপুষ্ট কিছু এজেন্ট ভয়ভীতি ও মামলার হুমকি দিয়ে বালু উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে, ফলে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।

প্রতিরক্ষা বাঁধ ও প্রকল্প বাণিজ্যের অভিযোগ

একদিকে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন হচ্ছে, অন্যদিকে ৫৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কুশিয়ারা প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প চালু রয়েছে। পরিবেশবিদদের মতে, নদী খনন না করে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে প্রকৃত সমস্যার সমাধান হবে না। তারা এটিকে প্রকল্প বাণিজ্যের একটি অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

পরিদর্শন শেষে শরীফ জামিল বলেন, “রাজনৈতিক প্রভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে কুশিয়ারা নদীতে ভাঙন বাড়ছে, আবার ভাঙনরোধের নামে ব্লকের ব্যবসা চলছে। প্রকল্পের নামে অর্থ লুটপাট হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “এই অবৈধ কার্যক্রম স্থানীয় জনগণের মতামত ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে একে অপরকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনবো এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাবো।”

পরিবেশবিদরা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে স্থানীয় জনগণের জানমাল রক্ষা করা যায়। তারা সতর্ক করে বলেছেন, যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে কুশিয়ারা নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে।

আরও পড়ুন:মাধবপুরে ১১০ কেজি গাঁজাসহ যুবক আটক

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত || তীর্থের কাক
Theme Customized By Durjoy Bangla