স্পোর্টস রিপোর্ট:শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে ১২ বছর পর ফাইনালে চট্টগ্রাম কিংস। শেষ তিন বলে চট্টগ্রাম কিংসের প্রয়োজন ছিল ৮ রান, হাতে ছিল মাত্র দুই উইকেট। খুলনা টাইগার্স জয়ের কাছাকাছি থাকলেও ম্যাচের নাটকীয়তা তখনও শেষ হয়নি। শরিফুল ইসলাম বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুললেও পরের বলেই ফিরতে হয় তাকে। শেষ বলে দরকার ছিল ৪ রান, আর সেই চাপ সামলে চট্টগ্রাম কিংসকে দুর্দান্ত এক জয় উপহার দেন আলিস আল ইসলাম। তার বাউন্ডারিতেই ১২ বছর পর বিপিএলের ফাইনালে জায়গা করে নেয় চিটাগাং কিংস।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম।
খুলনার সংগ্রাম এবং শেষ ওভারের উত্তেজনা
বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে খুলনা টাইগার্স। তবে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি তাদের। ৪২ রান তুলতেই তারা হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট— অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ (২), অ্যালেক্স রস (০), ওপেনার নাঈম শেখ (১৯) ও আফিফ হোসেন (৮)। বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও শিমরন হেটমায়ার দলকে টেনে তোলেন।
তাদের ৫০ বলে ৭৩ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের পথে এগোয় খুলনা। অঙ্কন ৪১ রানে ফিরে গেলে হেটমায়ার ২৯ বলে ফিফটি তুলে নেন। ৩৩ বলে ৪ ছক্কা ও ৬ বাউন্ডারিতে ৬৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। শেষ দিকে জেসন হোল্ডার ও মোহাম্মদ নেওয়াজের ব্যাটে শরিফুল ইসলামের করা শেষ ওভারে ১৭ রান যোগ করে খুলনা ৬ উইকেটে ১৬৩ রানের লড়াকু পুঁজি পায়।
নাফির ফিফটি ও খুলনার জোড়া ধাক্কা
১৬৪ রানের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের ইনিংসের শুরুতেও ধাক্কা আসে দ্রুত। হাসান মাহমুদের বোলিংয়ে পারভেজ ইমন ও গ্রাহাম ক্লার্ক ফিরে গেলেও হোসাইন তালাতকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন খাজা নাফি। ৩৭ বলে ফিফটি তুলে নেন নাফি, কিন্তু এরপরই খুলনাকে ম্যাচে ফেরান নাসুম আহমেদ।
নিজের টানা দুই ওভারে তালাত ও শামিম পাটোয়ারিকে ফিরিয়ে চট্টগ্রামের ভিত নাড়িয়ে দেন তিনি। এরপর মুশফিক হাসানের জোড়া আঘাতে খুলনার নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় হয়, এক ওভারে ফেরান নাফি ও খালেদ আহমেদকে। অধিনায়ক মিঠুনও দলের ভরসা হয়ে উঠতে পারেননি।
শেষ মুহূর্তের নাটকীয় জয়
১৭ ওভার শেষে চট্টগ্রামের সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ১৪২ রান। শেষ ২ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ২২ রান। হাসান মাহমুদের দারুণ বোলিংয়ে ১৯তম ওভারে আসে মাত্র ৭ রান। ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার হয় ১৫ রান।
খুলনার তরুণ পেসার মুশফিক হাসান চট্টগ্রামের ব্যাটারদের আটকানোর চেষ্টা করলেও শেষ ওভারের চতুর্থ বলে শরিফুল ইসলামের বাউন্ডারি খেলা জমিয়ে তোলে। কিন্তু পরের বলেই আউট হয়ে গেলে আবারও উত্তেজনা তৈরি হয়। শেষ বলে ৪ রান দরকার, চাপ সামলে আলিস আল ইসলাম ম্যাচ জেতানো বাউন্ডারি হাঁকান, আর তাতেই ২ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম কিংস।
১২ বছর পর বিপিএলের ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া চিটাগাং কিংস এবার মুখোমুখি হবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের। ৭ ফেব্রুয়ারির ফাইনালে কে হাসবে শেষ হাসি, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।