স্পোর্টস রিপোর্ট: লা লিগায় বিতর্কিত পেনাল্টিতে ড্র মাদ্রিদ ডার্বি। এর আগে এস্পানিওলের বিপক্ষে হারের পর রেফারিং নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেই প্রসঙ্গে বিদ্রুপমূলক মন্তব্য করেছিলেন লা লিগার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবাস। রিয়াল পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানালে, রেফারিদের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দেয় অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ।

এই বিতর্কের প্রভাব পড়েছে মাদ্রিদ ডার্বির মাঠেও। ম্যাচে রেফারির একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তে পেনাল্টি পায় অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ, যা নিয়ে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে সমতা ফেরায় রিয়াল, ১-১ গোলের ড্রয়ে শেষ হয় উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি।

সুবিধা বার্সেলোনার

ডার্বির এই ড্রয়ে সবচেয়ে বড় সুবিধা পেয়েছে বার্সেলোনা। লা লিগার শিরোপার দৌড়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল তারা, কিন্তু এই ম্যাচের ফলে আবারও সুযোগ তৈরি হয়েছে পয়েন্ট টেবিলে ফেরার।

রিয়ালের আক্রমণ বনাম অ্যাতলেটিকোর রক্ষণ

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দুর্দান্ত ফর্মে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। নিজেদের শেষ ২১ ম্যাচের মধ্যে ১৯টিতেই জয় পেয়েছিল তারা। তবে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের সুপরিচিত লো-ব্লক ডিফেন্স ভেদ করা যে সহজ নয়, সেটারই প্রমাণ মিলেছে এই ম্যাচে।

রিয়াল ম্যাচের শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে থাকলেও প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণ ভাঙতে হিমশিম খেয়েছে। অ্যাতলেটিকো নিজেদের রক্ষণভাগের অন্যতম তারকা রবিন লা নরমান্দকে এই ম্যাচে পায়নি, কিন্তু রিয়াল সেটার সুবিধা নিতে পারেনি।

অন্যদিকে, অ্যাতলেটিকোর উইঙ্গার লিনো ও ফরোয়ার্ড হুলিয়ান আলভারেজ বেশ কয়েকবার রিয়ালের রক্ষণে চাপ তৈরি করেন। ইনজুরির কারণে রিয়ালের নিয়মিত চার ডিফেন্ডারই ছিলেন না, কিন্তু অ্যাতলেটিকো সে সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি।

বিতর্কিত পেনাল্টিতে অ্যাতলেটিকোর লিড

ম্যাচের ৩১ মিনিটে আসে সবচেয়ে বিতর্কিত মুহূর্ত। ডি-বক্সের বাঁ দিক থেকে আসা ক্রসে নিয়ন্ত্রণ নিতে পা বাড়ান অ্যাতলেটিকোর সামুয়েল লিনো, একই সময়ে রিয়ালের চুয়ামেনিওও পা বাড়ান এবং তার পা লিনোর পায়ের ওপর পড়ে। তবে বল তখন দুজনের মাঝ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল।

রেফারি শুরুতে পেনাল্টি না দিলেও, ভিএআর দেখে স্পটকিকের নির্দেশ দেন। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে অ্যাতলেটিকোকে লিড এনে দেন হুলিয়ান আলভারেজ। লিনো ও আলভারেজ আরও কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করায় প্রথমার্ধে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি অ্যাতলেটিকো।

রিয়ালের ঘুরে দাঁড়ানো

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আগ্রাসী ফুটবল খেলতে থাকে রিয়াল মাদ্রিদ। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও রদ্রিগো দু’পাশ থেকে আক্রমণের ধার বাড়ান। এরই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ৫০তম মিনিটে সমতা ফেরায় রিয়াল।

ডান উইং থেকে রদ্রিগো দুজনকে কাটিয়ে ক্রস দিলে জুড বেলিংহ্যাম ফার্স্ট টাচে শট নেন, যা হিমেনেজের বাধায় ফিরে আসে। ফিরতি বল এমবাপে জালে পাঠালে সমতায় ফেরে রিয়াল মাদ্রিদ।

এরপর রিয়ালের একের পর এক আক্রমণ সামলেছেন অ্যাতলেটিকোর গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক। ভিনিসিয়ুস, রদ্রিগো, এমবাপে ও বেলিংহ্যামের শট দারুণভাবে রুখে দেন তিনি। তার অসাধারণ পারফরম্যান্সের সুবাদেই শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ।

এই ড্রয়ের ফলে শিরোপা দৌড়ে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল, যেখানে বার্সেলোনা সুযোগ পেয়েছে আবারও লড়াইয়ে ফেরার।

আরও পড়ুন:ভ্যালেন্সিয়াকে উড়িয়ে সেমিফাইনালে বার্সেলোনা