গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এর ঘটনায় আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবুল কাশেম (১৭) মারা গেছেন। তিনি ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

নিহত কাশেম ও সংঘর্ষের পটভূমি

নিহত আবুল কাশেম গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকার বাসিন্দা এবং মৃত জামাল হাজীর ছেলে। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর শাখার নেতা ছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, কাশেমকে ‘শহীদ’ ঘোষণা করা হয়েছে এবং তার জানাজা রাত ৯টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পর আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে কফিন মিছিল করা হবে। একই সঙ্গে সারাদেশে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে কাশেমের গায়েবানা জানাজা ও খাটিয়া মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।

সংঘর্ষের বিবরণ

গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে গাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের গ্রামের বাড়িতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়দের মতে, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা’র নামে ১০০-১৫০ জন ওই বাড়িতে হামলা চালায়, ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। গ্রামবাসী এটিকে ডাকাতি মনে করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মসজিদের মাইকে ডাকাতির ঘোষণা দেওয়া হলে তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে বেরিয়ে আসে এবং হামলাকারীদের ধাওয়া করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় ১৬-১৭ জনকে আটক করে গণপিটুনি দেওয়া হয়, যাতে অনেকে আহত হন।

অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি, আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে লুটপাটের খবর পেয়ে তারা সেখানে গিয়েছিলেন পরিস্থিতি সামাল দিতে। কিন্তু সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের অনুগত আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।

পরবর্তী পদক্ষেপ

এই সংঘর্ষে আহত কাশেমের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তার মৃত্যুর জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

সংঘর্ষের ঘটনার তদন্ত চলছে, তবে এ নিয়ে এখনো কোনো মামলা বা গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফির বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন