ডেস্ক রিপোর্ট: দীর্ঘ ১৭ বছর কারাভোগের পর কারামুক্ত হয়েছেন বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ২টায় তিনি কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স-ঢাকা বিভাগ) মো. জাহাঙ্গীর কবির।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় অস্ত্র আইনে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বাতিল করে তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। এর ফলে বাবর তার বিরুদ্ধে থাকা সব মামলায় খালাস পান এবং তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা থাকেনি।
লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তির খবরে তার নির্বাচনী এলাকা নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) ও আশপাশের এলাকায় আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। এলাকাবাসী এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে তোরণ নির্মাণ ও আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেন। বাবরের মুক্তির সংবাদে এলাকার মানুষ দল বেঁধে ঢাকায় এসে তাকে বরণ করেন।
তার স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবনী বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর পর ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেশের জনগণ তার মুক্তির জন্য অপেক্ষা করছিল। তিনিও জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে উদগ্রীব।”
২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেপ্তার হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর একাধিক মামলায় তার বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড এবং একটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়।
তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে মামলাগুলোর আপিল শুনানি শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় একের পর এক মামলায় খালাস পান বাবর। গত ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় ৮ বছরের সাজা থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়।
লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তির মাধ্যমে ভাটি বাংলার জনগণের ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা পূরণের নতুন পথ খুলবে বলে আশাবাদী তার পরিবার ও সমর্থকেরা।