ঢাবির অধীনে আর থাকছে না ৭ কলেজ। রাতভর উত্তেজনা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সঙ্গে রাজধানীর সাত কলেজের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে ঢাবি ভিসির জরুরি বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
ঢাবি উপাচার্যের বক্তব্য
লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের মধ্যে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনাগুলোর জন্য আমরা দুঃখিত। সাত কলেজের সম্মান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ রক্ষার্থে উভয় পক্ষের সম্মতিতে এই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ঢাবির অধীনে আর ভর্তি করা হবে না।
নতুন সিদ্ধান্তসমূহ
জরুরি বৈঠকে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:-১.২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সুপারিশ করা হয়েছে। ২.২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা ও ভর্তি ফি নির্ধারণের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।
বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য আশ্বাস
ঢাবি উপাচার্য নিশ্চিত করেছেন যে বর্তমানে ঢাবির অধীন চলমান শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের একাডেমিক কার্যক্রম যথাযথভাবে শেষ করতে দায়িত্বশীল থাকবে।
সাত কলেজের ইতিহাস
রাজধানীর সাত কলেজের মধ্যে রয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ এবং মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সময়ে এই সাতটি কলেজ ঢাবির অধিভুক্ত হয়। এর পেছনে লক্ষ্য ছিল সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে গুণগত উন্নয়ন ঘটানো।
তবে অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ ও আন্দোলন শুরু হয়। ঢাবি শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সাত কলেজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরাও একাধিকবার অভিযোগ করেন, অধিভুক্তি কার্যক্রমে তাদের শিক্ষাজীবন জটিলতার মুখে পড়েছে।
সবশেষে, নানা দফা আলোচনার পর ঢাবি ও সাত কলেজের এই পৃথকীকরণের মাধ্যমে সম্পর্কের ইতি টানা হলো।
আরও পড়ুন: জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন সারজিস