মেটায় পরিবর্তনের ঘোষণা: ফ্যাক্টচেকার বাতিল, রাজনৈতিক কনটেন্টে অগ্রাধিকার

টেক জায়ান্ট মেটা প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের ঘোষণা, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং থ্রেডসে ফ্যাক্টচেকার বাতিল করা হবে। একই সঙ্গে, সেন্সরশিপ কমিয়ে রাজনৈতিক কনটেন্টের পরিমাণ বাড়ানো হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম *দ্য গার্ডিয়ান*-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এক ভিডিও বার্তায় জাকারবার্গ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে মেটা মুক্ত মত প্রকাশকে অগ্রাধিকার দিতে চায়। তিনি জানান, ফ্যাক্টচেকারের পরিবর্তে টুইটারের মতো একটি কমিউনিটি নোটস ফিচার চালু করা হবে।

জাকারবার্গের মতে, মেটার ফ্যাক্টচেকারদের রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট কার্যক্রম আস্থার ঘাটতি তৈরি করেছে এবং প্রত্যাশিত ফলাফল আনতে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে মেটার কনটেন্ট মডারেশন টিমকে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে টেক্সাসে সরিয়ে নেওয়া হবে। তার ভাষায়, টেক্সাসে রাজনৈতিক পক্ষপাত নিয়ে কম উদ্বেগ রয়েছে।

ফিল্টারিং পদ্ধতিতে পরিবর্তন: মেটার নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, গুরুতর এবং অবৈধ কনটেন্ট বাদে অন্যান্য বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাকারবার্গ বলেন, “এতে কিছু খারাপ বিষয় হয়তো বাদ যাবে, তবে নির্দোষ পোস্ট এবং অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার ঝুঁকি কমবে।”

তিনি আরও জানান, লিঙ্গ ও অভিবাসনের মতো বিষয়গুলোর ওপর থেকে সীমাবদ্ধতা শিথিল করা হবে, যাতে ব্যবহারকারীরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন।

সেন্সরশিপবিরোধী অবস্থান: জাকারবার্গ ইউরোপের কঠোর সেন্সরশিপ আইন এবং লাতিন আমেরিকার গোপন আদালতের আদেশের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তার মতে, বিশ্বজুড়ে সেন্সরশিপ কমাতে মেটা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করবে।

নতুন নেতৃত্ব ও নীতিমালা বাস্তবায়ন: মেটার ওভারসাইট বোর্ডের সহ-সভাপতি এবং ডেনমার্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলে থর্নিং-শ্মিট বলেছেন, বোর্ড নতুন নীতিমালা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে এবং কার্যকর করার উদ্যোগ নেবে।

এদিকে, মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ পদত্যাগ করেছেন। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন রিপাবলিকান নেতা জোয়েল ক্যাপলান। বোর্ডের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিক ক্লেগ মেটার মুক্ত মত প্রকাশের নীতিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

জাকারবার্গ তার বক্তব্যে বলেন, “সেন্সরশিপ কমাতে আমরা কনটেন্ট ফিল্টারিং পদ্ধতি পুনর্গঠন করছি। যদিও এতে কিছু নেতিবাচক বিষয় এড়ানো কঠিন হবে, তবে নির্দোষ ব্যবহারকারীদের রক্ষা করা সম্ভব হবে।”

মেটার এই নীতিমালা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা এবং ব্যবহারকারীদের স্বাধীন মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি