যশোরের শহরতলীর পুলেরহাট এলাকায় আয়োজিত ড. মিজানুর রহমান আজহারির ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে পদদলিত হয়ে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর ও এর আশপাশে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বজলুর রশিদ রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
হাসপাতাল সূত্র ও আহতদের বরাতে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যার পর ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মাহফিলে যোগ দিতে পুলেরহাটে ভিড় জমাতে থাকেন। অনুষ্ঠানের মূল ফটকের সামনে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে মানুষের ঢল সামাল দিতে না পেরে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভিড়ের মধ্যে স্থান নিয়ে আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এতে অনেক মানুষ পড়ে গিয়ে পদদলিত হন।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠান। গুরুতর আহত পাঁচজনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাহফিলের স্বেচ্ছাসেবীরা জানিয়েছেন, অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তবে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি।
তিন দিনব্যাপী আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষ দিনে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারির আগমন উপলক্ষে মাহফিলস্থল লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। এদিন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহও বক্তব্য রাখেন।
শুক্রবার সকাল থেকেই যশোরের বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক এবং রেলপথে মানুষ মাহফিলস্থলের দিকে রওনা দেয়। যশোর-বেনাপোল, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-মাগুরা, যশোর-খুলনা মহাসড়কসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে গাড়ির চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। মানুষ বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে এবং ট্রেনে চড়ে পুলেরহাটে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। তবে সন্ধ্যার পর পায়ে হেঁটে মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
অনেকেই ভিড়ের কারণে মূল অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছাতে পারেননি এবং দূর থেকেই বক্তৃতা শুনতে বাধ্য হন। শহরের চাঁচড়া মোড় থেকে পুলেরহাট পর্যন্ত সড়কে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল। ভিড়ের কারণে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
মাহফিলের আয়োজকরা এত বিপুল মানুষের উপস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকলেও জনতার ঢল সামাল দিতে তাদের প্রচেষ্টাও যথেষ্ট ছিল না। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষ মাহফিলে যোগ দিতে ছুটে এলেও ব্যবস্থাপনার অভাব ও অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:দেশে ফিরলেন মিজানুর রহমান আজহারী, মাহফিলে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি