নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ১০ লাখ ২০ হাজার টাকার চেক ডিজঅনার মামলায় সাবিনা ইয়াসমিন (৪২) নামে এক সহকারী শিক্ষককে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মোহনগঞ্জ পৌরশহরের সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহাবুবুর রহমানের দায়েরকৃত মামলায় ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই নেত্রকোনা যুগ্ম দায়রা জজ আদালত -১ এর বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান অভিযুক্ত শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
রায়ের পর থেকে শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন পলাতক রয়েছেন। তিনি মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়নের গজধার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং জৈনপুর গ্রামের জায়দুর রহমানের স্ত্রী।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মোহনগঞ্জ পৌর শহরের থানা রোডে অবস্থিত মেসার্স সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক এবং রকেট-বিকাশ এজেন্ট মাহাবুবুর রহমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত নগদ টাকার বিনিময়ে রকেট সিমে টাকা লোড করা হতো। রকেট ডিলার হিসেবে ফরহাদ মিয়া, যিনি গজধার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনের ব্যবসায়িক অংশীদার ও আত্মীয়, এই কাজে নিয়োজিত ছিলেন। ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ও ১৫ ডিসেম্বর, দুই দফায় ফরহাদ মিয়া মাহাবুবুর রহমানের রকেট সিমে টাকা লোড না করেই তার কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মোহনগঞ্জ পৌর শহরের থানা রোডে অবস্থিত মেসার্স সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক ও রকেট-বিকাশ এজেন্ট মাহাবুবুর রহমান নিয়মিত রকেট সিমে টাকা লোড করতেন। রকেট ডিলার ফরহাদ মিয়া, যিনি গজধার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনের আত্মীয় ও ব্যবসায়িক অংশীদার, মাহাবুবের কাছ থেকে নগদ টাকা নিয়ে সিমে লোড করতেন। ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ও ১৫ ডিসেম্বর, ফরহাদ টাকা লোড না করেই মাহাবুব থেকে ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে নেন।
পরে মাহাবুব ফরহাদকে টাকার জন্য চাপ দিলে ফরহাদ জানান, তিনি ওই টাকা শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনকে দিয়েছেন। সাবিনা ইয়াসমিনও এই টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন এবং কিছুদিন পর ফেরত দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বারবার সময় নিয়েও টাকা ফেরত না দেওয়ায় ২০২২ সালের ২৫ জুলাই স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশি বৈঠক হয়। বৈঠকে সাবিনা অগ্রণী ব্যাংক মোহনগঞ্জ শাখায় তার স্বাক্ষরিত ১০ লাখ ২০ হাজার টাকার একটি চেক মাহাবুবকে দেন। তবে চেকটি জমা দেওয়ার পর পর্যাপ্ত টাকা ও সঠিক স্বাক্ষর না থাকায় চেকটি ডিজঅনার হয়।
এরপর মাহাবুব ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট সাবিনার নামে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান, কিন্তু কোনো জবাব না পাওয়ায় ২৮ সেপ্টেম্বর নেত্রকোনা যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে চেক ডিজঅনার মামলা দায়ের করেন। মামলায় জামিনে মুক্ত হলেও পরবর্তীতে অর্থ ফেরত না দেওয়ায় আদালত ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই সাবিনার অনুপস্থিতিতে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ ২০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড দেন। সাজাপ্রাপ্ত সাবিনা পলাতক থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি এবং ইমিগ্রেশন বিভাগকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে তিনি বিদেশে পালাতে না পারেন।
অভিযুক্ত সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন এবং মাহাবুবের পাওনা টাকার বিষয়ে আদালতের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, সাবিনা ২৩ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মেডিকেল ছুটিতে আছেন।